Thursday, March 20, 2014

উবুন্টু বনাম উইন্ডোজ - কেন লিনাক্স ব্যবহার করবেন?



          উবুন্টু বনাম উইন্ডোজ - কেন লিনাক্স ব্যবহার করবেন?


আমি বলি আপনার প্রয়েজনেই উচিত আপনার কম্পিউটারটিতে লিনাক্স ইন্সটল করা। কেন?
                                                কারণ.

.র্সবোচ্চ নিরাপত্তা ব্যাবস্থা
নিরাপত্তা ব্যাবস্থা হচ্ছে আরেকটি কারণ যার জন্য বাজারে লিনাক্স এর চাহিদা প্রতিদিন হু হু করে বাড়ছে। ডেক্সটপ ও র্সাভার উভয় ক্ষেত্রেই এমন ইন্ডাস্ট্রি বেসিস নিরাপত্তা ব্যাবস্থা আর অতি অল্প কয়েকটি সিস্টেমেই রয়েছে।

.র্সবনিম্ন মূল্য
পাইরেটেট সিস্টেম এর কথা বাদ দিলে এখনো পর্যন্ত বাজারে যে সব অপারেটিং সিস্টেম আছে তাদের মধ্যে লিনাক্স এর মূল্য সবচেয়ে কম। এমনকি লিনাক্স ইন্টারনেট থেকে ফ্রি ডাওনলোড করা যায়। ডেক্সটপ থেকে আরম্ভ করে র্সাভার পর্যন্ত সমস্ত সিস্টেম এর জন্য সবচেয়ে কম মূল্যের অপারেটিং সিস্টেম হচ্ছে লিনাক্স।


.নিশ্চিত নির্ভরশীলতা
আপনি গুরুত্বপূর্ণ কাজের ব্যাপারে নিশ্চিতভাবে নির্ভর করতে পারেন লিনাক্সের উপর। লিনাক্সের stable package কখনই ক্র্যাশ করে না বা বাগ দেখায় না। সাধারণত ডেভোলাপাররা র্সবোচ্চ মান নিশ্চিত করেই তবে বাজারে ছাড়ে।

.সহজ মাইগ্রেশন পদ্বতি
লিনাক্স আপনাকে দিচ্ছে সবচেয়ে সহজ মাইগ্রেশন পদ্বতি। আপনি চাইলে অন্য আপারেটিং সিস্টেমের সাথেও লিনাক্স চালাতে পারেন বা সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক লিনাক্সে বদলে ফেলতে পারেন।


.ভেন্ডর লক
ভেন্ডর লক ব্যাপারটা হচ্ছে লিনাক্স যারা বিত্রি করেন তারা চাইলেই স্বত্বাধিকারী হতে পারেন না। তার নিজের করে নিয়ে ইচ্ছে মত মূল্য নির্ধারণ করতে পারেন না। কারণ লিনাক্স উন্মুক্ত সফটওয়্যার। যে কেউ এটা ডেভোলপ করতে পারবেন এবং বিতরণ করতে পারবেন। তাই বিত্রেতাগন চাইলেও লিনাক্সের মূল্য বাড়িয়ে দিতে পারবেন না। অর্থাত্ বিত্রেতাগণ লিনাক্সকে নিজের নামে করে প্রোডাক্টটি লক্ করে দিতে পারেন না।
এর ফলে বাজারে সবসময় একটা প্রতিযোগিতা থাকে মূল্য্ কম রাখার।

.বিশ্বমানের সহায়তা
বিশ্বের বিভিন্ন ছোট বড় কোম্পানি যেমন hp, IBM, Novell লিনাক্সের টেকনিক্যাল ব্যাপারগুলোর সহায়তা দিয়ে থাকে। এর ফলে আপনি বিনামূল্যে বিশ্বমানের সহায়তা পেয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া ছোট খাট ফোরামগুলোতো রইলোই।


.প্রশিক্ষণ সময় কম
র্বতমানে যেসব অপারেটিং সিস্টেম ব্যাবহৃত হচ্ছে লিনাক্স প্রায় সেরকম। তাছাড়াও আদর্শ অপারেটিং সিস্টেম বলতে যা বুঝানো হয় লিনাক্স তার সবচেয়ে কাছে। এসব কারণে লিনাক্স শিখে নিতে খুবই কম সময় লাগে। যে কারণে অফিসের কম্পিউটার ব্যাবহারকারীগণও খুব কম সময়ে লিনাক্ম শিখে ফেলেন যা প্রশিক্ষণ খরচ ও সময় দুটোই কমায়।

.সহজলভ্য ডেক্সটপ সফটওয়্যার
অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেমে সফটওয়্যারগুলো কিনে নিতে হয়। কিন্তু লিনাক্সে এগুলো ফ্রি দেয়া থাকে। আপনি এসব সফটওয়্যার ইন্টারনেট থেকে আপডেটও করে নিতে পারবেন এবং সেটাও ফ্রি।

.উন্নতমানের কাষ্টম সফটওয়্যার
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যারা লিনাক্স নিয়ে কাজ করে তারা বিভিন্ন ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ফ্রি দিচ্ছে। এসব সফটওয়্যার এর বৈশিষ্ট হচ্ছে এসব তৈরীই করা হয় র্নিদিষ্ট ব্যাবসার জন্য যা কি না ব্যাবসার উন্নতির সহায়ক।

.চমত্কার নেটওর্য়াক ও সিস্টেম ব্যাবস্থাপনা
লিনাক্স এমন একটি নেটওর্য়াক আপনাকে দিতে সক্ষম যা আপনার নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা ও ব্যবস্থাপনার মান দুটোই বাড়িয়ে দিতে পারে।


যারা নতুন লিনাক্সে আসেন তারা প্রথমেই যে সমস্যায় পড়েন সেটা হল লিনাক্সের শত শত ডিস্ট্রো থেকে কোনটা ব্যবহার করবেন? অবশ্যই আপনার প্রয়োজনমত যেটাকে সবচেয়ে কাজের মনে হয় সেটা ব্যবহার করবে। কারন একেকজনের প্রয়োজন একেকরকম, যিনি ভিডিও এডিটিং করেন তার কাজের সাথে যিনি প্রোগ্রামার তার কোন মিল নেই, এই দুজনের জন্য দরকারী সফটওয়্যারও তাই ভিন্ন হবে। তাই বিভিন্ন পেশার মানুষের প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে লিনাক্স ডিস্ট্রও বিভিন্ন রকম হয়। তবে যারা সাধারন ইউজার তাদের কাজের ধরণ কিন্তু মোটামুটি একই – লেখালেখি, ইন্টারনেট ব্রাউজ, গান শোনা, মুভি দেখা, গেম খেলা ইত্যাদি টুকটাক কাজই সবাই করে। এসব বিচারে সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য সবচেয়ে উপযোগী হচ্ছে উবুন্টু।



কেন উবুন্টু ব্যবহার করবেন- এই প্রশ্নের উত্তর যদি খুঁজতে বের হন তবে হাজার হাজার জবাব পাবেন। ইদানিংকার খুব জনপ্রিয় এই অপারেটিং সিস্টেমটি লিনাক্সের কার্নেলের উপর তৈরি বলে সিকিউরিটি থেকে শুরু করে স্ট্যাবিলিটি পর্যন্ত লিনাক্সের সব ধরনের সুবিধাই এতে পাবেন। তাহলে কোন বৈশিষ্ট্য একে লিনাক্সভিত্তিক অন্যান্য ডিস্ট্রগুলো থেকে আলাদা করেছে? আসুন তাহলে এক ঝলক দেখে নেই।
উবুন্টু অন্যান্য ডিস্ট্রোর মত “কেবলই আরেকটা লিনাক্স”ডিস্ট্রো না । এটা ডেবিয়ানের মত শক্তিশালী ডিস্ট্রোর উপর ভিত্তি করে তৈরি হওয়া একটি ডিস্ট্রো যার মূল স্লোগান হল “মানুষের জন্য লিনাক্স”। আক্ষরিক অর্থেই উবুন্টুকে সাধারন মানুষের ব্যবহারের জন্যই বানানো হয়েছে। এক সময় মনে করা হত খোঁচা খোঁচা দাড়ি গোঁফ ওয়ালা জিনিয়াস টাইপের লোকজন কীবোর্ডে খটাখট আওয়াজ করে লিনাক্স ব্যবহার করে। দিন এখন পালটে গেছে, সেই সাধারন ব্যবহারকারীদের জন্য কমান্ডের লিনাক্সের যুগ আর নেই। ডেস্কটপে লিনাক্স এসেছে অনেক বছর। আর সেই ডেস্কটপ লিনাক্সকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে উবুন্টু। উবুন্টু ব্যবহার করতে খুব আহামরি কোন কম্পিউটার জ্ঞানের দরকার নেই, – এতই সোজা এই অপারেটিং সিস্টেমটি। আর এর ইউজার ফ্রেন্ডলিনেসের কথা তো লিনাক্সের এখন সবচেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট। উবুন্টুই একমাত্র লিনাক্স ডিস্ট্র যেটাকে মাইক্রোসফট সমীহ করে চলে, কারন বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, উবুন্টু ইউজার ফ্রেন্ডলিনেসের দিক থেকে উইন্ডোজের চেয়েও উন্নত।
সবচেয়ে সহজ ওএস ইন্সটলেশন পদ্ধতি সম্ভবত উবুন্টুর। খুবই ইউজার ফ্রেন্ডলি ইন্টারফেসে কেবল মাউস দিয়ে টিপে টিপে যে কেউ উবুন্টু ইন্সটল করতে পারবে মাত্র কয়েকটি ধাপে। সফটওয়্যার খোঁজার জন্য গুগল নিয়ে ঘাঁটাঘাটির দরকার নাই। সফটওয়্যারের বিশাল রিপজিটরি আছে এতে, যেখানে হাজার হাজার ফ্রী সফটওয়্যার তালিকাভুক্ত হয়ে আছে। শুধু গিয়ে ইন্সটল দিলেই হল, সাথে সাথে ইন্সটল হয়ে যাবে। যেকোন সফটওয়্যার আপডেটও খুব সহজেই করা যায়। কোন সফটওয়্যারের আপডেট চলে আসলে উবুন্টুই আপনাকে আপডেট নোটিফিকেশন দেখাবে আর আপডেটের অপশন দিবে। গুগল সার্চ করে আপডেট নামানোর কোনই প্রয়োজন নাই।
উবুন্টুর সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এর বিশাল ইউজার কমিউনিটি। লিনাক্সের সবচেয়ে বিশাল কমিউনিটি হচ্ছে উবুন্টুর। যেকোন সমস্যায় কেবল কমিউনিটির কাছে ধর্না দিলেই হবে, সমাধান করার জন্য লোকজন ঝাঁপিয়ে পড়বে। কমিউনিটি’র লোকজনও কিন্তু বেশ বন্ধুভাবাপন্ন। যেকোন প্রশ্নকেই অবহেলার চোখে দেখা হয়না এই কমিউনিটিতে। যত বোকাই প্রশ্ন করুন না কেন, আপনি ঠিকই আপনার জবাব পেয়ে যাবেন। বোকা বোকা প্রশ্নের জন্য আপনার উপর কেউ বিরক্ত হবেনা বা আপনাকে খোঁটাও দেবেনা – এমনই চমৎকার কমিউনিটি।
উবুন্টুর সিডি হচ্ছে লাইভ সিডি অর্থাৎ পিসিতে ইন্সটল না করেই আপনি সিডি থেকে সব প্রয়োজনীয় অ্যাপ্লিকেশনসহ উবুন্টু ব্যবহার করতে পারবেন, এমনকি সেই সিডি থেকে ইন্টারনেটেও কানেক্ট হয়ে ওয়েব ব্রাউজ করতে পারবেন!
লিনাক্স ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেমগুলোর মধ্যে হার্ডওয়্যার কম্পিটিব্যালিটি উবুন্টুরই সবচেয়ে বেশি। অর্থ্যাৎ সবচেয়ে বেশি সংখ্যক হার্ডওয়্যার উবুন্টুই চিনতে পারে। ফলে ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক এডাপ্টারের মত হার্ডওয়্যার চিনে নিতেও উবুন্টুর কোন সমস্যা হয়না। ডেল, হিউলেটপ্যাকার্ড, লেনোভো সহ নামকরা ব্র্যান্ডগুলো এখন উবুন্টুর কথা মাথায় রেখে হার্ডওয়ারের ড্রাইভার রিলিজ করে। তাই হার্ডওয়ার নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়না।
বলা হয়ে থাকে যে, বর্তমানে লিনাক্সের জয়যাত্রার পতাকা যদি কারো বহন করার ক্ষমতা থাকে তো সেটা উবুন্টুর আছে। গুগলের মত বিশ্বখ্যাত কোম্পানি তাদের অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে উবুন্টুকে বেছে নিয়েছে। তাহলে আর আপনি বসে থাকবেন কেন? ঘুরে আসুন উবুন্টুর সাইট থেকে, সংগ্রহ করুন আপনার উবুন্টু!


উইন্ডোজ ব্যবহারকারীদের অনেকেই লিনাক্স ব্যবহার করতে ভয় পান একে জটিল এবং অভিজ্ঞ ব্যবহারকারীদের জন্য তৈরি অপারেটিং সিস্টেম ভেবে। তাদের ধারণা পুরোপুরি ভুল নয়... একসময় সত্যিই তাই ছিল। কিন্তু এখন সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য তৈরি হয়েছে উবুন্টু লিনাক্স যা উইন্ডোজের চেয়েও অনেক সহজ এবং ব্যবহারবান্ধব। এখানে উবুন্টু লিনাক্সের কিছু সুবিধা তুলে ধরছি, এবং একই সাথে উইন্ডোজের দূর্বলতাগুলো উল্লেখ করছি....

১। নিরাপত্তা: লিনাক্সের নিরাপত্তা ব্যবস্থা উইন্ডোজের চেয়ে অনেক উন্নত এবং নিশ্ছিদ্র। উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে এন্টিভাইরাস এবং ফায়ারওয়াল ইন্সটল করা না থাকলে ভাইরাস/হ্যাকারের আক্রমণ প্রায় নিশ্চিত। কিন্তু লিনাক্সের সিস্টেম কার্নেল ভাইরাস এবং হ্যাকারদের আক্রমণ থেকে পুরোপুরি মুক্ত। কাজেই কোন ধরণের সিকিউরিটি সফ্টওয়্যার(এন্টিভাইরাস/ফায়ারওয়াল ইত্যাদি) ছাড়াই নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারেন উবুন্টু লিনাক্স।

২। স্বয়ংসম্পূর্ণ: অনেকেই মনে করেন উইন্ডোজ লিনাক্সের চেয়ে অধিক স্বয়ংসম্পূর্ণ, কিন্তু এ ধারণা পুরোপুরি ভুল। উইন্ডোজের কোন সিস্টেম ফাইল মুছে গেলে বা ভাইরাসের আক্রমণে সিস্টেম কার্ণেলের কোন অংশের ক্ষতি হলে উইন্ডোজ নিজে থেকে ঠিক করতে পারে না, ব্যবহারকারীকে ট্রাবলশুট করে ঠিক করতে হয়। আর পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতা ছাড়া উইন্ডোজের অনেক ত্রুটি ঠিক করা সম্ভব নয়। ফলে একমাত্র সমাধান- উইন্ডোজ রি-ইন্সটল। এছাড়াও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর এনটিএফএস ফাইল সিস্টেমের ক্ষতি হলেও উইন্ডোজ অনেক সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে autochk কমান্ড ব্যবহার করে না। এর ফলে প্রয়োজনীয় ফাইল ও ডকুমেন্ট সবসময় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থেকে যায়।
অপরদিকে উবুন্টু লিনাক্সে কোন সমস্যা সৃষ্টি হওয়া প্রায় অসম্ভব। কোন কারণে সমস্যা হলেও উবুন্টুর বুট মেনু থেকে রিকভারি মোড চালু করলে উবুন্টু নিজে থেকে সম্ভাব্য সবধরণের সমস্যা খতিয়ে দেখে এবং নিজে থেকেই সবকিছু ঠিক করে নেয়, ব্যবহারকারীকে কিছুই করতে হয় না। ফাইল সিস্টেমের সমস্যা হলে উবুন্টু সেটিও ঠিক করে নেয়।
এছাড়াও উইন্ডোজে সব ধরণের হার্ডওয়্যারের ড্রাইভার ডিফল্ট দেয়া থাকে না... খুঁজে নিয়ে ইন্সটল করতে হয়। আর লিনাক্সে বহু ড্রাইভার ডিফল্টভাবেই দেয়া থাকে।

৩। ব্যবহারবান্ধব: উবুন্টু লিনাক্স উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের চাইতে অনেক সহজ এবং ব্যবহারবান্ধব। উবুন্টুতে সব কাজের জন্য আলাদা-আলাদা বিভাগে বিভক্ত করা সফ্টওয়্যার ইন্টারনেটে রিপোজিটরিতে জমা থাকে এবং উবুন্টুর এ্যাপ্লিকেশন ম্যানেজার ব্যবহার করে ব্যবহারকারী পছন্দমত সফ্টওয়্যার ডাউনলোড করে ইন্সটল করে নিতে পারেন।

উবুন্টুর সফ্টওয়্যারগুলো ইন্সটল করতে কোন ধরণের প্রোগ্রামিং দক্ষতার প্রয়োজন নেই।

উবুন্টুর ডেস্কটপ উইন্ডোজের চাইতেও অনেক কার্যকরী, সহজে পরিবর্তনযোগ্য(Customizable) এবং ব্যবহারবান্ধব। উইন্ডোজের টাস্কবারের বিকল্প হিসাবে উবুন্টুতে আছে প্যানেল নামে উইন্ডোজ টাস্কবারের চাইতেও অধিক ক্ষমতাসমন্ন ডেস্কটপ বার। এগুলোতে আপনি ইচ্ছামত সফ্টওয়্যারের শর্টকাট তৈরি করে নিতে পারেন, বিভিন্ন এ্যাপলেটের সাহায্যে ডেস্টপকে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারেন, আর সেই সাথে উইন্ডোজ টাস্কবারের মত উইন্ডো লিস্ট এবং নোটিফিকেশন এড়িয়া তো থাকছেই!


ডেস্কটপ যে এমনই হতে হবে এরকম কোন বাধ্যবাধকতা নেই।


এছাড়াও উবুন্টুতে একই সাথে অনেকগুলো ডেস্কটপ/ওয়ার্কস্পেস ব্যবহার করতে পারবেন।

৪। দ্রুততা: কিছু ত্রুটির কারণে উইন্ডোজ ধীরে ধীরে মন্থর হয়ে পরে। এ ত্রুটিগুলোর মধ্যে হার্ড ডিস্কের এলোমেলো ফাইলসজ্জা(ফ্র্যাগমেন্টেশন), রেজিস্ট্রির অব্যবহৃত অংশ(Obsolete Registry Entries) ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বিভিন্ন ভাইরাস ও স্পাইওয়্যারের আক্রমণের কারণেও উইন্ডোজের গতি হ্রাস পায়।
অপরদিকে লিনাক্সের ext3 ফাইল সিস্টেমে বিশেষ পদ্ধতেতে ফাইলগুলো সজ্জিত করে... ফলে ফ্র্যাগমেন্টেশনের কোন সম্ভাবনা নেই। আর উবুন্টু উইন্ডোজের মত অব্যবহৃত রেজিস্ট্রি এন্ট্রি জমা করে রাখে না। উবুন্টুতে ভাইরাস/স্পাইওয়্যার কোনটিই আক্রমণ করতে পারে না। ফলে বহুদিন ব্যবহারের পরও উবুন্টুর স্বাভাবিক গতি ও কর্মক্ষমতা বজায় থাকে। যেখানে উইন্ডোজ ধীরে ধীরে মন্থর হয়ে পরে।

৫। গ্রাফিক্যাল ইফেক্ট: উবুন্টু লিনাক্সে রয়েছে অসাধারণ কম্পিজ ফিউশন ইফেক্ট। যার দ্বারা দৃষ্টিনন্দন উইন্ডো এনিমেশনের পাশাপাশি অত্যন্ত কার্যকরী কিছু ইফেক্ট পাওয়া যায়। এর মধ্যে ট্যাব গ্রুপিং, উইন্ডো ট্রান্সপারেন্সি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ট্যাব গ্রুপিং এর সাহায্যে আপনি কয়েকটি উইন্ডোকে ট্যাব আকারে একত্র করে রাখতে পারবেন এবং উইন্ডো ট্রান্সপারেন্সি ইফেক্টের সাহায্যে যেকোন উইন্ডোকে স্বচ্ছ(ট্রান্সপারেন্ট) করে ফেলতে পারবেন। এগুলো ছাড়াও আরও বহু ইফেক্ট ডিফল্টভাবে দেয়া আছে এবং প্রতিদিন নিত্যনতুন ইফেক্ট ইন্টারনেটে বিনামূল্যে ডাউনলোডের জন্য দেয়া হচ্ছে।
অপরদিকে উইন্ডোজের নতুন সংস্করণ উইন্ডোজ ভিস্তাতে কিছু গ্রাফিক্যাল ইফেক্ট আনা হলেও সেগুলোর বেশিরভাগই কোন কাজের নয়। এছাড়াও ভিস্তার ইফেক্টগুলো সক্রিয় রাখলে প্রচুর সিস্টেম রিসোর্স(Ram, প্রসেসর) ব্যবহার করে যেখানে উবুন্টুর ইফেক্টগুলো সক্রিয় রাখলেও উইন্ডোজ এক্সপির চাইতেও অনেক কম সিস্টেম রিসোর্স ব্যবহার করে।

৬। সকল কাজের জন্য পর্যাপ্ত সফ্টওয়্যার: উবুন্টুতে সকল কাজের জন্যই পর্যাপ্ত সফ্টওয়্যার আছে। উইন্ডোজের মত লক্ষ-কোটি নামী বেনামী সফ্টওয়্যার না থাকলেও এ সফ্টওয়্যারগুলো অত্যন্ত সহজ, সাবলীল এবং উইন্ডোজের সফ্টওয়্যারগুলোর মতই বিভিন্ন ধরণের কাজের উপযোগী।
যেমন: মাইক্রোসফ্ট অফিসের বিকল্প হিসাবে আছে ওপেন অফিস অর্গ, ফটোশপের বিকল্প হিসাবে আছে অসাধারণ একটি গ্রাফিক্স ডিজাইন এবং ফটো এডিটিং সফ্টওয়্যার গিম্প, ডিভিডি/ভিসিডি মুভি দেখার জন্য টটেম, ভিএলসি মিডিয়া প্লেয়ার, গান শোনার জন্য রিদমবক্স, বংশি, লিসেন, এডোবি রিডারের বিকল্প হিসাবে আছে কেপিডিএফ, এক্সপিডিএফ, ডকুমেন্ট ভিউয়ার ইত্যাদি। এরকম সব ধরণের সফ্টওয়্যারের-ই অসংখ্য বিকল্প আছে উবুন্টুতে... এবং সবগুলোই পুরোপুরি বিনামূল্যে!

৭। বাংলা ভাষার ব্যবহার: উবুন্টু লিনাক্সের জন্য রয়েছে বাংলা ল্যাঙ্গুয়েজ প্যাক, যেটি শুধুমাত্র অপারেটিং সিস্টেমকেই বাংলা করে না বরং বিভিন্ন সফ্টওয়্যারকেও অনেকাংশে বাংলায় অনুবাদ করে। বাংলা লেখার জন্য উবুন্টুতে আছে অত্যন্ত চমৎকার প্রভাত ফোনেটিক লে-আউট।

আর সবচেয়ে বড় কথা হল লিনাক্স পুরোপুরি ফ্রি এবং ওপেন সোর্স এবং এতে ব্যবহৃত সফটওয়্যারগুলোও বিনামূল্যে পাওয়া যায়। আর উইন্ডোজ টাকা দিয়ে কিনতে হয় এবং এর সব সফটওয়্যারও ফ্রি নয়।


একটি লিনাক্স ডেস্কটপ :

এবার আপনিই সিদ্ধান্ত নিন... টাকা দিয়ে কিনে বা চুরি করে ত্রুটিসম্পন্ন উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করবেন নাকি বিনামূল্যে বিশ্বের সবচাইতে নিরাপদ অপারেটিং সিস্টেম লিনাক্স এর ব্যবহারবান্ধব সংস্করণ উবুন্টু লিনাক্স ব্যবহার করবেন?




  .........................................................................................................................................................
                          লেখাগুলো বিভিন্ন ব্লগ থেকে ও গুগল করে লেখা । ধন্যবাদ সবাইকে । অনেকাংশে হুবহু কপি করেছি । আমার উদ্দেশ্য ছিলো সবাইকে লিনাক্স সম্পর্কে জানানো ।

Nazmul Hussain

বাংলা ফন্টে বাংলা এবং ইংরেজী ফন্টে ইংরেজী লিখুন ।

0 comments:

Post a Comment

 

Copyright @ 2013 Nazmul Hussain's Blog.